Published: 2015-03-18 Views: 3835

বাইসাইকেলের ধরন


Types-of-Bicycles

বাইসাইকেল হল দুই চাকার প্রথম যানবাহন যা খুবই পরিবেশ বান্ধব। এই যানটি প্রথম আবিষ্কৃত বা তুলে ধরা ১৯ শতাব্দির শুরুর দিকে। ১৮১৭ সালে জার্মান স্থপতি এই দুই চাকার যান আবিষ্কার করেন যা বর্তমানে বাইসাইকেল নামে পরিচিত। ঠিক এখনকার সময়ে বাইসাইকেল পৃথিবীর বহুল জনপ্রিয় বাহনগুলার মধ্যে অন্যতম বলা বাহুল্য যে এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যার সাথে বাইসাইকেলের পরিচয় হয়নি। উন্নত বিশ্বের অন্যতম দুই পরাশক্তি চীন এবং জাপান বাইসাইকেলকে তাদের অন্যতম প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

অন্যদিকে বাংলাদেশেও বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে যা খুব ভালভাবে দৃশ্যমান। এমনকি আমাদের দেশে অনেক সাইক্লিস্ট টীমও ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে যারা সাইক্লিং এর ব্যাপারে সবাই উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন। “বিডি সাইক্লিস্ট” অনেক গুলার মধ্যে অন্যতম। তাদের সবচেয়ে কার্যকরী ভুমিকা হল তরুন প্রজন্মকে সাইক্লিং এর জন্যে উৎসাহিত করা। একই সাথে তারা সাইক্লিং এর সকল ধরনের তথ্যও সরবরাহ করে থাকে।

ফিচারের বিবেচনায় বাইসাইকেলকে বেশ কয়েক শ্রেনিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে বহুল প্রচলিত সাইকেল গুলার মধ্যে অন্যতম হল মাউন্টেন বাইক, ইলেকট্রিক বাইক, ফিক্সড গিয়ার বাইসাইকেল, সাধারণ বাইসাইকেল, কিডস/বাচ্চাদের সাইকেল, ফোল্ডিং/ভাজ করা যায় এমন সাইকেল, লেডিস সাইকেল, রোড সাইকেল, হাইব্রিড বাইসাইকেল এবং অন্যান্য। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত সাইকেল গুলা নিম্নে দেওয়া হলঃ

সাধারণ বাইসাইকেল
এই ধরনের সাইকেলটা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহর অঞ্চলেও সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। এই সাইকেলগুলাতে মাউন্টেন সাইকেল বা রেসিং সাইকেলের মত তেমন ফিচার চোখে পড়ে না তবে এই সাইকেল গুলার পারফরমেন্স অনেক ভাল। ফোনিক্স ক্ল্যাসিক, রয়্যাল হিরো এগুলা সাধারণ সাইকেলের মধ্যে অন্যতম।

মাউন্টেন বাইক
এই ধরনের সাইকেলটা বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সাইকেলগুলা মধ্যে একটি। এও সাইকেল অনেক শক্তপোক্ত এবং এটি তৈরিই হয়েছে অফ রোড তথা পাহাড়ি এবং অসমান রাস্তায় চালানোর জন্যে। তরুন রাইডাররা এই সাইকেলটা ব্যবহার করে মূলত স্টান্ট বা সমজাতীয় এডভ্যানচারের জন্য ব্যবহার করে থাকে। মাউন্টেন বাইকে সাস্পেনশন থাকে, উন্নতমানের টায়ারস এবং বেশ ভাল মানের ব্রেকিং সিস্টেম থাকে যা চালককে বেশ ভাল সাপোর্ট দেয়। আর এই কারনেই এই বাইক দ্বারা স্টান্ট সহ আরোও অনেক কিছুই সম্ভব হয়ে থাকে।

রোড সাইকেল
এই সাইকেলটার আরেক নাম হল রেসিং সাইকেল। মূলত এটির ডিজাইন করা হয়েছে পাকা রাস্তায় দ্রুত চলাচলের জন্যে। এই সাইকেলে আছে সরু টায়ার, গিয়ারস, হালকা ওজন এবং বেশ সুন্দরভাবে চলার প্রযুক্তি। আর এইসকল সুবিধার কারনেই রাইডাররা এই সাইকেলটাকে রেসিং এবং লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার জন্যে বেশি ব্যবহার করে। মূলত রোড বাইক অনেক ধরনের হয়ে থাকে কিন্তু যে বাইকটা শুধুমাত্র রেসিং এর জন্যে ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেটাই অনেক বেশি গিয়ার এবং স্পিড পরিলক্ষিত হয় অন্যান্য রেসিং বাইকের থেকে। আবার এই বাইকটা অনেক সময় অফ রোডেও ব্যবহার করতে দেখা যায়।

ট্যুরিং বাইক
এই সাইকেল ট্যুরের জন্যে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে যা অনেক আরামদায়ক এবং অনেক ওজন নিতে সক্ষম যদি তা না হত তবে কেউই এর লম্বা হুইলবেজের ওপর ভর দিয়ে অনেক ভারি বস্তু বহন করতে পারতো না। খুব কম সংখ্যক ট্যুরিং বাইক এখন বাজারে বর্তমান কিন্তু ট্যুরিং এবং স্পোর্টস ট্যুরিং সাইকেল হল সেগুলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

হাইব্রিড বাইসাইকেল
এই সাইকেলটা অন্য সকল সাইকেলের থেকে আলাদা যা রোড সাইকেল, মাউন্টেন সাইকেল, ট্যুরিং সাইকেল এগুলোর সাথে কোন মিল নাই। কিন্তু এই সাইকেলটা যথেস্টই আরামদায়ক সকল বয়সের রাইডারদের জন্যে। আবার যেকোন বয়সের রাইডার এই বাইকটা চালাতে পারবে। হাইব্রিড বাইসাইকেল অনেক ধরনের হয়ে থাকে যেমনঃ ট্রেকিং বাইক, ক্রস বাইক, কমিউটার বাইক, সিটি বাইক ইত্যাদি।

লেডিস বাইসাইকেল
খুব সহজেই এই বাইকের ধারণা পাওয়া যায় যে এই সাইকেল মূলত মেয়েদের জন্যে। এই ধরন গড়ন এবং রং মেয়েদের বেশ পছন্দের। এই সাইকেলটা কয়েক ধরনের পাওয়া যায়।

বাচ্চাদের সাইকেল
মনে হয় এই সাইকেলের ব্যাপারে অতিরিক্ত কিছু বলার নাই কারণ এই সাইকেলটা বাচ্চাদের জন্যে যেখানে বড়রা কোনভাবেই এডজাস্ট করতে পারবে না। লক্ষনীয় ব্যাপার এই যে এই সাইকেলে অনেক সময় চারটা চাকা ব্যবহার করা হয় মূলত বাচ্চারা যেন ঠিক মত ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে সে কারণে।

বলে রাখা ভাল যে উল্ল্যেক্ষিত সাইকেল গুলা ছাড়াও বিশ্বব্যাপী আরও অনেক সাইকেল আছে যা বেশ ভালভাবে পরিচিত তাদের স্বকিয় বৈ শিষ্ঠের কারণে। সেগুলার মধ্যে রয়েছে ফোল্ডিং সাইকেল, বিএমএক্স, ২৯ সাইকেল ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশী অনেক কোম্পানি এই বাইকগুলা সরবোরাহ করে থাকে। তাদের মধ্যে নামকরা কিছু কোম্পানী হলঃ লক্স, নেক্রো, ফিনিক্স, ট্রেক, আপল্যান্ড, ফরম্যাট ইত্যাদি। অন্যদিকে বাংলাদেশি কিছু নামকরা ব্রান্ডও আছে যারা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে তাদের সুনাম বাইরেও ছড়িয়েছে এগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ প্রিন্স, র্যুলে, ভেলোস ইত্যাদি। ভারতীয় কোম্পানির মধ্যে রয়েছেঃ হিরো বর্তমানে এভন কোম্পানীও তাদের পন্য বাংলাদেশে সরবোরাহ করে আসছে।


New Added Bicycles